আজমীর শরীফের নিচে মন্দির থাকার দাবি নিয়ে বিতর্ক
আজমীর শরীফের নিচে মন্দির থাকার দাবি নিয়ে সম্প্রতি নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সেনা এ বিষয়ে একটি পিটিশন দায়ের করেছে।
পিটিশনের প্রেক্ষাপট
ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বরে দায়ের করা এই পিটিশনের ভিত্তিতে আজমীরের একটি আদালত বিষয়টি তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। পিটিশনে দাবি করা হয়েছে, সূফি সাধক খাজা মইনুদ্দিন চিশতির দরগা, যা আজমীর শরীফ নামে পরিচিত, সেখানে আসলে একটি শিব মন্দির ছিল। সংগঠনটি সেখানে হিন্দুদের পূজা করার অনুমতি পুনরায় চালু করার দাবি জানিয়েছে।
হিন্দু সেনার দাবিগুলো
হিন্দু সেনার প্রধান বিষ্ণু গুপ্ত বলেন, “আমাদের দাবি হলো, আজমীর শরীফকে ‘সংকট মোচন মহাদেব মন্দির’ হিসেবে ঘোষণা করতে হবে। দরগার কোনো রেজিস্ট্রেশন থাকলে তা বাতিল করতে হবে। পাশাপাশি, ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থার মাধ্যমে তদন্ত করে হিন্দুদের পূজার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।”
আইনজীবীর বক্তব্য ও আদালতের পদক্ষেপ
পিটিশনারদের আইনজীবী যোগেশ শিরোজা জানিয়েছেন, দেওয়ানি বিচারক মনমোহন চান্দেল আজমীর দরগাহ কমিটি, ভারতের সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় এবং ভূতত্ত্ব জরিপ সংস্থার নয়াদিল্লি অফিসকে নোটিশ পাঠিয়েছেন। তাদের সবাইকে এ বিষয়ে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ঐতিহাসিক তথ্য ও বিতর্কিত দাবি
পিটিশনে ১৯১১ সালে প্রকাশিত হর্বিলাস সার্দার নামে এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারকের লেখা একটি বইয়ের উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। বইটিতে বলা হয়েছিল, আজমীর শরীফের চারপাশে হিন্দু মৃৎশিল্প ও খোদাই পাওয়া যায়। আরও দাবি করা হয়, দরগাটি একটি শিব মন্দিরের ধ্বংসাবশেষের ওপর নির্মিত এবং এর সবচেয়ে পবিত্র স্থানটিতে জৈন মন্দিরের অস্তিত্ব রয়েছে।
দরগাহ কমিটির প্রতিক্রিয়া
তবে দরগাহ কমিটি এই দাবিকে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে অস্বীকার করেছে। তাদের বক্তব্য, আজমীর শরীফ সারা বিশ্ব থেকে—আফগানিস্তান থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত—সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষের মিলনস্থল। এটি বহুত্ববাদ ও ধর্মীয় সহিষ্ণুতার প্রতীক।
এই বিতর্ক আরও জোরালো হয়ে উঠতে পারে, তবে আদালতের পরবর্তী সিদ্ধান্তই হয়তো চূড়ান্ত রায় নির্ধারণ করবে।