রাজমুকুট লাভ

হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালামকে জেল থেকে মুক্তি দেয়ার পর, বাদশাহ আয়ান ইবনে ওলীদ খুবই সম্মানের সাথে তাঁকে তার পাশে সিংহাসনে বসালেন এবং যে স্বপ্ন তিনি দেখেছিলেন, সেটা ইউসুফ আলাইহিস সালামকে নিজেই বর্ননা করলেন এবং ইউসুফ আলাইহিস সালামের পবিত্র মুখ থেকে এর তাবীর শুনলেন। হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম প্রথমে বাদশাহের দেখা স্বপ্ন সবিস্তারে বর্ননা করলেন। অতঃপর বিস্তারিত ভাবে পুরা স্বপ্ন হুবহু শুনায়ে দিলেন। এটা শুনে বাদশাহ আশ্চর্য হয়ে গেল এবং বললো, স্বপ্নতো অদ্ভুত ছিল কিন্তু এর থেকে অদ্ভুত হলো আপনার হুবহু বলে দেয়াটা। যাহোক তাবীর শুনে বাদশাহ ইউসুফ আলাইহিস সালামের পরামর্শ চাইলে, তিনি বললেন, এখন শস্য ভান্ডার গড়ে তোলা প্রয়োজন, স্বচ্ছলতার বছর গুলোতে অধিক কৃষি কাজ করে অধিক শস্য উৎপন্ন করে শস্য ভান্ডার গড়ে তোলা দরকার, প্রজাদের উৎপাদন থেকে এক পঞ্চমাংশ আদায় করে যা মওজুদ হবে, সেটা মিসর ও মিসরের আশে পাশের বাসিন্দাদের জন্য যথেষ্ট হবে। সাত বছর পর যখন দুর্ভিক্ষ দেখা দিবে, তখন চারিদিক থেকে আল্লাহর বান্দারা আপনার কাছে শস্য ক্রয় করতে আসবে এবং আপনার কোষাগারে এত ধন সম্পদ পুঞ্জিভূত হবে, যা আপনার আগে কারো কাছে হয়নি।

বাদশাহ বললো, এ বিশাল কোষাগারের সুষ্ট নিয়ন্ত্রন কে করবে? হযরত ইউসুফ আলাইহিস

সালাম বললেন, আপনার রাজ্যের সমস্ত কোষাগার আমার জিম্মায় দিন। বাদশাহ রাজি হয়ে গেল এবং বললো, আপনার থেকে অধিক উপযুক্ত আর কে হতে পারে? এরপর রাজ্যের সমস্ত সম্পদ ইউসুফ আলাইহিস সালামের কর্তৃত্তাধীনে দিয়ে দিল। এক বছর পর ইউসুফ আলাইহিস সালামকে ডেকে রাজমুকুট পরায়ে দিলেন, তলোয়ার ও মোহর হাতে দিলেন এবং সিংহাসনে বসায়ে স্বীয় রাজ্য তাঁকে হস্তান্তর করলেন। আজিজ মিসরকেও বরখাস্ত করে দিলেন এবং নিজে ও একজন সাধারণ প্রজার মত হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালামের অনুগত হয়ে গেল। (কুরআন শরীফ ১৩ পারা ১ আয়াত, হাযায়েনুল এরফান ৩৪৩পৃঃ)

সবক: আল্লাহতাআলা বড় বেনিয়াজ, ক্ষমতাবান, শক্তিমান ও দার্শনিক। তিনি তাঁর নবীগনকে অনেক এখতিয়ার, হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা ও পৃথিবীর সম্পদ রাজির উপর কর্তৃত্ব দান করেছেন। ইনসাফ প্রতিষ্ঠা ও দীনের হেফাজতের জন্য জালিম বাদশাহ থেকে পদ দাবী করা ও গ্রহন করা জায়েয।

Related posts

Leave a Comment