জুলেখা

জুলেখা খুবই সুন্দরী মহিলা ছিলেন। তিনি ছিলেন, তাইমুস বাদশাহের কন্যা। তিনি এক রাত্রে এক অপূর্ব সুন্দর যুবককে স্বপ্ন দেখলেন এবং ওকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কে? সে জবাব দিল আমি আজিজ মিসর। জুলেখার মনে এ স্বপ্নটা ভীষন রেখাপাত করলো এবং সর্বক্ষন সেই স্বপ্নটা তাঁর মনে জাগরুক রইলো।

বড় বড় বাদশাহের পক্ষ থেকে বিবাহের প্রস্তাব আসলো, কিন্তু তিনি অসম্মতি জ্ঞাপন করলেন। এবং নিজের মনোভাব ব্যক্ত করে বলে দিলেন যে, তিনি আজিজ মিসর ব্যতীত অন্য কাউকে বিবাহ করবেন না। অতএব শাহ তাইমুস আজিজ মিসরের সাথে স্বীয় কন্যার বিবাহ দিয়া দিলেন।

জুলেখা আজিজ মিসরকে দেখে হতভম্ব হয়ে গেলেন। কারন তাঁর স্বপ্নের পুরুষের সাথে এর কোন মিল নেই। যাহোক কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর আজিজ মিসর হযরত ইউসুফকে ক্রয় করে ঘরে আনলে জুলেখা ওনাকে তাঁর স্বপ্নের আকৃতির অনুরূপ দেখতে পেলেন এবং তাঁর প্রেমে অস্থির হয়ে গেলেন।

মনোবাসনা পূর্ন করার জন্য তিনি একটি মনোরম মহল তৈরী করালেন, যার মধ্যে সাতটি কামরা ছিল। মহলটাকে খুবই সুন্দরভাবে সাজালেন এবং নিজেও খুবই সাজগোজ করেমনি কোন এক বাহানায় ইউসুফ আলাইহিস সালামকে সেই মহলে নিয়ে আসলেন। এপ্রথম এমবায় বাবেশ করা মাত্র সেটার দরজা বন্ধ করে নিয়ে দ্বিতীয় কামরায় নিয়ে গেলেন এবা এটার নামার বন্ধ করে দিয়ে তৃতীয় কামতায় নিয়ে গেলেন। এভাবে তৃতীয়, চতুর্থ, পদমর এ৫ এম্যা বন্ধ করে সম্ভ্রম কামরায় নিয়ে গেলেন এবং সেখানে গিয়ে ইউসুফ আলাইহিস বলমের সাথে অবৈধ কাজে লিপ্ত হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলেন। হযরত ইউসুফ এ অবস্থা সবে বিস্মিত হয়ে গেলেন। সেই সময় সেই কামরার ছাদ ফেটে গেল এবং ইউসুফ অলাইহিস সালাম দেখতে পেলেন যে, হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালাম স্বীয় আঙ্গুল দাঁতে ধমাড় ধরে বলছেন, বেটা। খবরদার। যেন সামান্যতম কুধারণা পর্যন্ত না আসে।

হররত ইউসুফ আলাইহিস সালাম জুলেখাকে বললেন, আল্লাহকে ভয় কর এবং এ পরিত্র মালকে অপবিত্র করো না এবং আমার প্রতি আসক্ত হয়োনা। জুলেখা তাঁর কথা শুনলেন না, গীদাহীন আসক্ত হয়ে পড়লেন। হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম যখন অবস্থা বেগতিক দখাসন, তিনি বের হয়ে আসতে চেষ্টা করলেন। জুলেখাও তাঁর পিছু নিলেন। তিনি যেই কমবার দরজার সামনে আসলেন, সেটির দরজার তালা এমনিতে খুলে গেল।

এবং

জুলেখা তাঁর পিছনে পিছনে দৌঁড়ে এসে তাঁয় কোর্তা মুবারক ধরে পিছন দিক থেকে টান দিলেন, যেন তিনি বের হতে না পারেন। কিন্তু তাঁকে ধরে রাখতে পারলেন না। তিনি বের হয়ে আসলেন। এ টানাটানির সময় আজিজ মিসর দরজার বাইরে দাঁড়ানো ছিল। তিনি

বাব প্রসই

উভয়কে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখে ফেললেন। জুলেখা নিজেকে নির্দোষ ও ইউসুফ আলাইহিস সালামকে দোষী করার ফন্দী এটে স্বীয় স্বামীকে বলতে লাগলেন, যে আপনার স্ত্রীর প্রতি অশালীন আচরণ করে, তার কি শান্তি হওয়া চাই? আমি ঘুমাচ্ছিলাম, সে এসে আমাকে কুপ্রস্তাব সো। ওকে বন্দী কর বা অন্য কোন শাস্তি দাও। হযরত ইউসুফ আলাইহিস বললেন, এটা মিথ্যা কথা। বাস্তব ঘটনা এর বিপরীত। সে নিজেই কুকর্মে-ফুসলায়েছিল আর বদনাম করছে। আমার। আজিজ মিসর বললেন এর প্রমান কি? ঐ কামরায় জুলেখার মামার এক দুগ্ধপোষা শিশু ছিল, যার বয়স হয়েছিল মাত্র তিন মাস, সে দোলনায় শোয়া ছিল। ইউসুফ আলাইহিস সালাম বললেন, সেই শিশুকে জিজ্ঞেস করুন। আজিজ মিসর বললেন, তিন মাসের শিশুকে কি জিজ্ঞেস করবো এবং এ কি বলবে। ইউসুফ আলাইহিস সালাম বললেন, আল্লাহতাআলা একে কথা বলার শক্তি দানে এবং আমার সত্যতা প্রমাণে সক্ষম। আজিজ মিসর সেই শিশুকে নিজেস করলে, সে সুস্পষ্ট কণ্ঠে বললো, ইউসুফ আলাইহিস সালামের পরিহিত কোতাটি দেখে নাও। যদি সেই কোর্তার সামনের দিকে ছেঁড়া হয়, তাহলে জুলেখা সত্যবাদী আর যদি

উকে

পিছনের দিকে ছেঁড়া হয়, তাহলে ইউসুফ আলাইহিস সালাম সত্যবাদী। তদন্ত করে দেখা গেল যে জাগড় পিছন দিকে ছেঁড়া এটার দ্বারা পরিষ্কার বুঝা যাচ্ছিল যে, ইউসুফ আলাইহিস সালাম জ্বালা থেকে পালিয়ে যাচ্ছিল আর জুলেখা তাঁর পিছু নিয়েছিল। এজন্য কোর্তার পিছন দিক ছেঁড়া। আজিজ মিসর এ বাস্তব লক্ষণ দেখে বুঝতে পারলেন যে, ইউসুফ আলাইহিস সালাম সরাতনী। অতঃপর তিনি ইউসুফ আলাইহিস সালামের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিলেন। (কুরমান

এবং

de

শরীফ পারা ১২ আয়াত ১৩। রুহুল বায়ান ১৫৭৬ ১৫৮৩১) সবক: নবীগণ মায়ুম হয়ে থাকেন, ছোট-বড় সব ধরণের গুনাহ থেকে তাঁরা পবিত্র। মানুষ যখন আল্লাহকে ভয় করে আল্লাহর পথে ধাবিত হয়, তখন পথের সমস্ত বাধা বিঘ্ন অনায়াসে বিদুরীত হয়ে যায়। হযরত ইয়াকুব আলাইহিস সালাম তাঁর প্রিয় সন্তান হযরত ইউসুফের অবস্থা সম্পর্কে জ্ঞাত ছিলেন এবং তাঁর জানা ছিল যে, এখন ইউসুফ আলাইহিস সালাম কোথায় আছেন এবং এ সময় তিনি কোন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন। আল্লাহ ওয়ালাগণ বাহ্যিকভাবে যত দূরেই থাকুন না কেন, কিন্তু কারো কোন বিপদের সময় সাহায্য করার জন্য পৌঁছে যান। আল্লাহতাআলা তাঁর নৈকট্য প্রাপ্ত বান্দাগনের সহায়তার জন্য তিন মাসের শিশুকেও বাকশক্তি দান করেন এবং তাঁর পবিত্র বান্দাগনের পবিত্র চরিত্রে সামান্যতম খুঁত লাগতে দেন না।

Related posts

Leave a Comment