হযরত নূহ আলাইহিস সালমের কউম বড় পাপিষ্ঠ ও অপরিনামদর্শী ছিল। হযরত নূহ আলাইহিস সালাম সাড়ে নয়শ বছর দিনরাত সত্যের প্রচার করা সত্ত্বেও ওদেরকে সৎপথে আনতে পারলেন না। শেষ পর্যন্ত উনি ওদের ভাংসের জন্য আল্লাহর কাছে এ বলে প্রার্থনা করলেন, হে আল্লাহ। ওদেরকে সমূলে ফাংস করে দাও। তাঁর এ বদলুআ কবুল হলো এবং আল্লাহ তাঁকে নির্দেশ দিলেন, হে নুহা আমি এক ভয়ংকর জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি করবো এবং ওসব কাফিরদেরকে ধ্বংস করে দিব। তুমি নিজের জন্য এবং তোমার মুষ্টিমেয় অনুসারীদের জন্য একটি কিশৃতী তৈরী করে নাও।
নির্দেশ মুতাবেক হয়রত নূহ আলাইহিস সালাম জংগলে গিয়ে কিন্তী তৈরী করতে শুরু করলেন। কাফিরেরা তাঁকে দেখতো ও জিজ্ঞেস করতো, হে নূহ, কি করতেছ? তিনি বললেন, এমন এক ঘর তৈরী করছি, যেটা পানির উপর চলতে পারে। কাফিরেরা এ উত্তর শুনে হাসতো ও মসকরা করতো। হযরত নূহ আলাইহিস সালাম বলতেন, আজ তোমরা হাসতেছ কিন্তু এমন একদিন আসবে যেদিন আমি তোমাদেরকে দেখে হাসবো। হযরত নূহ আলাইহিস সালামের এ কিশতী তৈরী করতে দু’বছর সময় লেগেছিল। এর দৈর্ঘ্য ছিল তিনশ গজ, প্রস্থ পঞ্চাশ গজ এবং উচ্চতা ছিল ত্রিশ গজ। এ কিশৃতী তিন তলা বিশিষ্ট বানানো হয়েছিল। নিচের তলায় হিংস্র জীবজন্তু, মধ্যম তলায় চতুষ্পদ জন্তু ইত্যাদি এবং উপর তলায় স্বয়ং হযরত নূহ আলাইহিস সালাম, তাঁর অনুসারীগণ এবং খাদ্য সামগ্রী ছিল। বিভিন্ন পাখীও উপর তলায় ছিল। যখন আল্লাহর হুকুমে ভয়াল জলোচ্ছ্বাস হলো, তখন কিশতীর আরোহীরা ব্যতীত দুনিয়ার বুকে যারা ছিল, সবাই ডুবে মারা গেল। এমনকি নূহ আলাইহিস সালামের পুত্র কেনানও, যে কাফির ছিল, সেই মহা প্লাবনে ডুবে গিয়েছিল। (কুরআন করীম সূরা হুদ, খাযায়েনুল এরফান ৩৩০ পৃঃ)
সবক: খোদা তাআলার নাফরমানী দ্বারা এ পৃথিবীতেও অধঃপতন ও ধ্বংসের শিকার হতে হয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসুলের আনুগত্যের দ্বারা উভয় জাহানে নাজাত ও কল্যাণ পাওয়া যায়।
ReplyForwardAdd reaction |