দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া মারা গেছেন। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

৮০ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যুসংবাদটি নিশ্চিত করেছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সংবাদমাধ্যমকে জানান, বুধবার (৩১ ডিসেম্বর) ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে জানাজা অনুষ্ঠিত হতে পারে। পরে সংসদ ভবন এলাকার পাশে অবস্থিত জিয়া উদ্যানে তার স্বামী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে খালেদা জিয়াকে দাফন করা হবে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইং জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান, তার স্ত্রী জুবাইদা রহমান, মেয়ে জাইমা রহমান, প্রয়াত ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান, দুই মেয়ে জাহিয়া রহমান ও জাফিয়া রহমান, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও হাসপাতালে ছিলেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যুর খবর পাওয়া মাত্রই হাসপাতাল জুড়ে শোকের ছায়া নেমে আসে। চিকিৎসক ও নার্সদের অনেককে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে।
শোকের খবর দ্রুত সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে, এবং সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা তাদের শোক প্রকাশ করেছেন।
জানা গেছে, খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে সাত দিনব্যাপী শোক পালন করবে বিএনপি। দলীয় কার্যালয়ে কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে, নেতাকর্মীরা কালো ব্যাজ ধারণ করবেন এবং কোরআন তেলাওয়াত করা হবে।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিস, লিভার সিরোসিস ও কিডনির জটিলতায় ভুগছিলেন। গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে দ্রুত তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছিল। বিদেশে নেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও শারীরিক অবস্থা অনুকূল না থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী ও মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় মহিলা প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ১৯৮১ সালের ৩০ মে তার স্বামী রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হন। এরপর ১৯৮২ সালে খালেদা জিয়া বিএনপিতে যোগ দেন এবং ১৯৮৪ সালে দলের চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বে বিএনপি বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
