তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম, নিয়ত, আগে ও পরের দোয়া

1
241
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম, নিয়ত, আগে ও পরের দোয়া
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম, নিয়ত, আগে ও পরের দোয়া
Advertisements
5/5 - (2 votes)

Table of Contents

তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম, নিয়ত, আগে ও পরের দোয়া

আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) নিজে যে সব আমল করেছেন এবং উম্মতকে যা করতে বলেছেন এবং সাহাবায়ে কেরাম তাঁর অনুমতি নিয়ে যা করেছেন তাকে সুন্নাত বলে।

সুন্নত দুই প্রকার যথা: ১. সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ এবং ২. সুন্নতে যায়েদাহ।

তাহাজ্জুদ নামাজ নফল না সুন্নত

তাহাজ্জুদ একটি সুন্নত নামাজ। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার আগে, মুসলমানরা এই নামাজটি বাধ্যতামূলকভাবে আদায় করতেন। তাহাজ্জুদ ছিল রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর উপর ফরজ। সাহাবাগণ এই নামায গুরুত্ব সহকারে আদায় করতেন। এই প্রার্থনায় শারীরিক, মানসিক ও আধ্যাত্মিক বৃদ্ধি ও প্রশান্তি পাওয়া যায়। মাঝরাতে ঘুম থেকে ওঠার পর এই নামাজ আদায় করা হয় বলে একে তাহাজ্জুদ বলা হয়। তাহাজ্জুদ নফল পর্যায়ের সুন্নত। তা আদায় না করতে পারলে কোনো পাপ নেই।

Advertisements

আজকের এই পাঠ পড়ে আমরা কি কি জানব ?

  • তাহাজ্জুদ নামাজ
  • তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়ত
  • তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল
  • তাহাজ্জুদ নামাজ কত রাকাত
  • তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম
  • তাহাজ্জুদ নামাজ কয় রাকাত
  • তাহাজ্জুদ নামাজ কত রাকাত ও নিয়ত
  • মহিলাদের তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম
  • তাহাজ্জুদ নামাজ নফল না সুন্নত
  • তাহাজ্জুদ নামাজ টাইম,

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, “আর রাতের কিছু অংশে আপনি তাহাজ্জুদ আদায় করতে থাকুন। এটা আপনার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পাওনা। আশা করা যায় আপনার প্রতিপালক আপনাকে মাকামে মাহমুদ তথা প্রশংসিত স্থানে প্রতিষ্ঠিত করবেন। ” (সূরা বনি ইসরাইলঃ ৭৯)

তাকওয়া সৃষ্টির মাধ্যমে সুন্দর পৃথিবী উপহার দেওয়াই রমজানের দাবি। তাহাজ্জুদ নামাযের মাধ্যমে তাকওয়ার পথ সর্বোত্তম অর্জিত হয়। এজন্য যারা নিয়মিত তাহাজ্জুদ আদায় করেন, যাদেরকে কোরআনে মুহসিন ও মুত্তাকি বলা হয়েছে, তাদেরকে আল্লাহর রহমত এবং পরকালে অনন্ত সুখের অধিকারী বলে বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা রাতের অল্প অংশে ঘুমাতেন এবং শেষ রাতে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন।

ঈদুল ফিতর অর্থ কি | ঈদের নামাজ আদায়ের নিয়ম | ঈদুল ফিতরের নামাজের নিয়ম

মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাহাজ্জুদ নামাজকে সর্বোত্তম নামায বলে ঘোষণা করেছেন, যা মুসলিম শরীফে স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে। মদীনায় আগমনের পর তার প্রথম ভাষণে তিনি রাত জাগরণকে সাফল্যের চাবিকাঠি হিসেবে উল্লেখ করেন।

তিনি বললেন, হে লোক সকল! ইসলামের প্রচার ও প্রসার করুন, মানুষকে খাবার দিন, আত্মীয়তা অটুট রাখুন এবং যখন মানুষ রাতে ঘুমিয়ে থাকবে তখন আপনি নামাজ পড়তে থাকবেন। তবেই আপনি সফল হবেন, নিরাপদে জান্নাতে যেতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, তাহাজ্জুদ নামাজের ব্যবস্থা করুন, এটা নেককার লোকদের স্বভাব, এটি আপনাকে আল্লাহর নৈকট্য দান করবে, গুনাহ থেকে রক্ষা করবে এবং শরীর থেকে রোগ দূর করবে। (মুসলিম)

তাহাজ্জুদ সালাত দুই রাকাত থেকে বার রাকাত পর্যন্ত পড়ার প্রচলন রয়েছে। হজরত আয়েশা (রাঃ) বলেন, হজরত নবী করিম (সাঃ) রমজান এবং রমজানের বাইরে আট রাকাতের বেশি কিয়াম করতেন না। হাদিসের ব্যাখ্যাকাররা এই বর্ণনার ব্যাখ্যায় কিয়াম বলতে তাহাজ্জুদের নামাজকেই বুঝিয়েছেন।

নবী করিম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এই আট রাকাত সব সময় শেষ রাতে আদায় করতেন। এটি ‘কিয়ামুল লাইল’ নামে প্রচলিত রয়েছে এবং আল্লাহওয়ালাদের অনেকেই রমজানে ‘কিয়ামুল লাইল’ জামাতের সঙ্গে আদায় করে থাকেন।

তাই তাহাজ্জুদ নামাজের জন্য শেষ রাতে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। হঠাৎ করে গভীর রাতে ওঠার অভ্যাস গড়ে তোলা নিতান্তই কঠিন কাজ। তবে বছরের এগারো মাস শেষ রাতে জেগে তাহাজ্জুদ পড়া কষ্টকর হলেও রমজানে এটি মোটেও কঠিন নয়। রমজান মাসে যেহেতু শেষ রাতে সাহরি খাওয়ার জন্য জাগতে হয়, তখন তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করার একটি সুবর্ণ সুযোগ চলে আসে। এ রমজানে অভ্যস্ত হয়ে সারা বছর তাহাজ্জুদের আমল জারি রাখা সম্ভব। এ সুযোগ কাজে লাগানোর বিকল্প নেই।

  • তাহাজ্জুদ নামাজের সময়, রাকাআত

ইশার নামাজ আদায়ের পর থেকে সুবহে সাদেকের আগ পর্যন্ত সালাতুল লাইল বা তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া যায়। তবে অর্ধ রাতের পর থেকে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া ভালো। শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা সর্বোত্তম।

তাহাজ্জুদ নামাজ ২ থেকে ১২ রাকাআত পর্যন্ত পড়া বর্ণনা পাওযা যায়। সর্ব নিম্ন ২ রাকাআত আর সর্বোচ্চ ১২ রাকাআত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ পড়তেন। তাই ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ পড়াই ভালো। তবে এটা পড়া আবশ্যক নয়।

সম্ভব হলে ১২ রাকাআত তাহাজ্জুদ আদায় করা। তবে ৮ রাকাআত আদায় করা উত্তম। সম্ভব না হলে ৪ রাকাআত আদায় করা। যদি তাও সম্ভব না হয় তবে ২ রাকাআত হলেও তাহাজ্জুদ আদায় করা ভালো। তবে তাহাজ্জুদ নামাজের কোনো কাজা নেই।

তাহাজ্জুদ নামাজ কত রাকাত ও নিয়ত | তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল | তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়ত

  • তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত

উচ্চারণঃ নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তা’আলা রাকাআতাই ছালাতিত তাহাজ্জুদে সুন্নাতু রাসুলিল্লাহি তা’য়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারিফাতি আল্লাহু আকবার।

বাংলায় নিয়তঃ ছালাতুত তাহাজ্জুদ দুই রাকাআত সুন্নত নামাজ আদায়ের উদ্দেশ্যে কিবলামুখী হয়ে নিয়ত করলাম, আল্লাহু আকবার।

  • তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার নিয়ম

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুই দুই রাকাআত করে এ নামাজ আদায় করতেন। যে কোনো সুরা দিয়েই এ নামাজ পড়া যায়। তবে তিনি লম্বা কেরাতে নামাজ আদায় করতেন। তাই লম্বা কেরাতে তাহাজ্জুদ আদায় করা উত্তম। সাধারণ লোক প্রত্যেক রাকায়াতে সূরা ফাতিহার পর তিনবার করে সূরা ইখলাস পড়তে পারে ।

তাকবিরে তাহরিমা ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নিয়ত বাঁধা। অতঃপর ছানা পড়া। সুরা ফাতেহা পড়া। সুরা মিলানো তথা কেরাত পড়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অনেক লম্বা কেরাত পড়তেন। অতঃপর অন্যান্য নামাজের ন্যায় রুকু, সেজদা আদায় করা। এভাবেই দ্বিতীয় রাকাআত আদায় করে তাশাহহুদ, দরূদ ও দোয়া মাছুরা পড়ে সালাম ফেরানোর মাধ্যমে নামাজ সম্পন্ন করা।

এভাবে দুই দুই রাকাআত করে ৮ রাকাআত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা উত্তম। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাযথভাবে রাতের শেষ প্রহরে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

তাহাজ্জুদের আগে ও পরের দোয়া

প্রিয় ইসলামী ভাই ও বোনেরা আজকের পোস্ট থেকে আমরা জানবো তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়শ এবং নিয়ত সাথে সাথে তাহাজ্জুদ নামাজের দোয়াসমূহ । তো চলুন আজকের পোস্ট শুরু করা যাক ।

তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব ও ফযীলত

■ যারা স্বীয় পালনকর্তার উদ্দেশ্যে সেজদাবনত হয়ে এবং দাঁড়িয়ে রাত অতিবাহিত করে।”
[সূরা ফুরকান, আয়াত ৬৪)

■ তাদের পার্শ্ব শয্যা থেকে পৃথক থাকে, তারা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে ভয়ে ও আশায় এবং যা কিছু আমি তাদেরকে দান করেছি তা থেকে দান করে। কেউই জানে না তাদের জন্য কৃতকর্মের কি কি নয়ন প্রীতিকর প্রতিদান লুকায়িত রয়েছে।
[সূরা সাজদা, আয়াত ১৬-১৭]

■ তারা রাতের সামান্য অংশই নিদ্রা যেত, রাতের শেষ প্রহরে তারা ক্ষমা প্রার্থনা করত।**
[সূরা আয-যারিয়াত, আয়াত ১৭-১৮]

■ হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, হে লোকেরা! সালামের ব্যাপক প্রচলন কর। (গরীবদের) আহার করাও এবং রাতে লোকেরা যখন ঘুমিয়ে থাকে, তখন তাহাজ্জুদের নামাজ পড়। তাহলে নিশ্চিন্তে জান্নাতে প্রবেশ করবে। [তিরমিযী।

■ হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রমজানের রোযার পর সবচেয়ে উত্তম রোযা মহররম মাসের রোযা, আর ফরয নামাযের পর সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে রাতের (তাহাজ্জুদ) নামায। [মুসলিম/ মুনতাখাব হাদিস।

১- রাতে উঠে তাহাজ্জুদের আগে দোয়া।
তাহাজ্জুদ নামাযের আগে ১ বার

■ হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রাতে যখন তাহাজ্জুদের জন্য উঠতেন, তখন এই দোয়া পড়তেন-

অর্থঃ হে আল্লাহ! সকল প্রশংসা আপনারই জন্য, আপনি সকল আসমান ও জমিন এবং উহাতে যে সকল মাখলুক আবাদ রয়েছে সকলের রক্ষণাবেক্ষণকারী, সমস্ত প্রশংসা আপনারই জন্য, জমিন আসমান ও উহার মধ্যে অবস্থিত সকল মাখলুকের উপর আপনারই রাজত্ব।

সমস্ত প্রশংসা আপনারই জন্য, আপনি জমিন-আসমানের আলো দানকারী, সমস্ত প্রশংসা আপনারই জন্য, আপনি জমিন-আসমানের বাদশাহ, সমস্ত প্রশংসা আপনারই জন্য, প্রকৃত অস্তিত্ব আপনারই, আপনার অঙ্গিকার অটল, আপনার সাক্ষাৎ অবশ্যই লাভ হবে, আপনার ফরমান সত্য, জান্নাতের অস্তিত্ব সত্য, দোযখের অস্তিত্ব সত্য, সমস্ত নবী (আলাইহিস সালাম) সত্য, (হযরত) মোহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সত্য (রাসূল), কেয়ামত অবশ্যই আসবে।

হে আল্লাহ! আমি নিজেকে আপনার কাছে সোপর্দ করলাম, আমি আপনাকে অন্তর দ্বারা মেনে নিলাম, আপনারই উপর ভরসা করলাম, আপনারই দিকে মনোনিবেশ করলাম, (অস্বিকারকারীদের মধ্য থেকে) যার সাথে বিবাদ করেছি তা আপনারই সাহায্যে করেছি এবং আপনারই দরবারে ফরিয়াদ পেশ করেছি, অতএব এ যাবত আমার সকল কৃত পাপ আর যা পরে করব, আর যে গুনাহ আমি গোপনে করেছি, আর যা প্রকাশ্যে করেছি ক্ষমা করে দিন।

আপনিই তৌফিক দান করে দ্বীনি আমলের দিকে অগ্রগামী করেন। আপনিই তৌফিক ছিনিয়ে নিয়ে পশ্চাদগামী করেন। আপনি ব্যতীত কোন মাবুদ নাই, নেক কাজ করার শক্তি আর বদ কাজ থেকে বাঁচার শক্তি একমাত্র আল্লাহর পক্ষ থেকেই হয়। [বোখারী]

তাহাজ্জুদে অভ্যস্ত ব্যক্তি, যদি ঘুমের আধিক্যের কারণে চোখ না খোলে, তবুও সে তাহাজ্জুদের সওয়াব পেয়ে যায়। নাসাঈ)

২- তাহাজ্জুদ নামায শেষ করে দোয়া।
তাহাজ্জুদ নামায শেষে ১ বার

হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এক রাতে তাহাজ্জুদ নামায শেষ করার পর এই দোয়া পাঠ করতে আমি শুনেছি –

তাহাজ্জুদ নামাজ কত রাকাত ও নিয়ত | তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল | তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়ত
তাহাজ্জুদ নামাজ কত রাকাত ও নিয়ত | তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল | তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়ত
তাহাজ্জুদ নামাজ কত রাকাত ও নিয়ত | তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত নাকি নফল | তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়ত

অর্থঃ হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে আপনার খাস রহমত প্রার্থনা করছি, যা দ্বারা আপনি আমার দিলকে হেদায়াত নসীব করুন, আমার কাজকে সহজ করে দিন, আমার পেরেশানী দূর করে দিন, আমার অনুপস্থিত বিষয়গুলিকে তত্ত্বাবধান করুন, আমার উপস্থিত বিষয়াদিতে উন্নতি ও সম্মান দান করুন, আমার আমলকে (শিরক ও রিয়া হইতে) পাক করে দিন, আমার অন্তরে এমন কথা ঢেলে দিন যা আমার জন্য সঠিক ও উপযোগী, আমি যা ভালবাসি আমাকে তা দান করুন, এবং উক্ত রহমত দ্বারা আমাকে সর্বপ্রকার অনিষ্ট থেকে হেফাজত করুন।

হে আল্লাহ, আমাকে এমন ঈমান ও একীন নসীব করুন যার পর আর কোন প্রকার কুফর না থাকে এবং আমাকে এমন রহমত দান করুন যা দ্বারা আমার দুনিয়া ও আখেরাতে আপনার পক্ষ থেকে মর্যাদাপূর্ণ ও সম্মানজনক স্থান লাভ হয়। হে আল্লাহ, আমি আপনার কাছে ফয়সালা ও সিদ্ধান্তের বিশুদ্ধতা, শহীদদের ন্যায় মেহমানদারী, ভাগ্যবানদের ন্যায় জীবন এবং শত্রুর মোকাবিলায় আপনার সাহায্য প্রার্থনা করছি।

Read more islamic post

হে আল্লাহ, আমি আপনার নিকট আমার প্রয়োজন পেশ করছি, যদিও আমার বুদ্ধি অপূর্ণ ও আমার আমল দুর্বল, আমি আপনার রহমতের মুখাপেক্ষী। হে কার্যসম্পাদনকারী ও অন্তরসমূহের শেফাদানকারী, আপনি যেমন আপন কুদরত দ্বারা সমুদ্রগুলি পৃথক করে রাখেন একটিকে অপরটি থেকে (লোনাকে মিষ্টি থেকে এবং মিষ্টিকে লোনা থেকে), তেমনি আমাকে দূরে রাখুন দোযখের আযাব হতে যা দেখে মানুষ হায় হায় করতে আরম্ভ করে এবং আমাকে দূরে রাখুন কবরের আযাব থেকে।

হে আল্লাহ, যে কল্যাণ পর্যন্ত আমার জ্ঞান বুদ্ধি পৌঁছতে পারেনি এবং আমার আমল উহা অর্জন করতে দুর্বল এবং আমার নিয়তও সে পর্যন্ত পৌছেনি এবং আমি আপনার কাছে সেই কল্যাণ সম্পর্কে আবেদনও করিনি, যাহা আপনি আপনার মাখলুক হতে কোন বান্দার সঙ্গে ওয়াদা করেছেন অথবা এমন কোন কল্যাণ যা আপনি আপনার কোন বান্দাকে দেয়ার ইচ্ছা করেছেন, আমিও আপনার কাছে আপনার রহমতের উছিলায় সেই কল্যাণ প্রত্যাশা করি হে সমস্ত জগতের পালনকর্তা।

হে আল্লাহ, আপনি দৃঢ় অঙ্গীকারকারী ও নেক কাজের মালিক, আমি আপনার কাছে শাস্তির দিনে নিরাপত্তা ও কেয়ামতের দিন ঐ সমস্ত লোকদের সঙ্গী হয়ে জান্নাত প্রার্থনা করছি যারা আপনার নৈকট্যপ্রাপ্ত, আপনার দরবারে উপস্থিত, রুকু সেজদায় পড়িয়া থাকে, অঙ্গীকারকে পালন করে। নিশ্চয় আপনি বড় মেহেরবান ও অত্যন্ত মহব্বত করনেওয়ালা এবং নিশ্চয় আপনি যা চান তা-ই করেন। হে আল্লাহ, আমাদেরকে অন্যদের জন্য হেদায়েতের পথ প্রদর্শক ও নিজেদেরকে হেদায়াতপ্রাপ্ত বানিয়ে দিন, আমরা যেন নিজেরা পথভ্রষ্ট ও অন্যদের জন্য পথভ্রষ্টকারী না হই। আপনার ওলীদের সাথে আমরা যেন সন্ধিকারী এবং আপনার দুশমনদের যেন দুশমন হই।

যে আপনার সাথে মহব্বত রাখে তার সাথে আপনার মহব্বতের কারণে যেন মহব্বত করি, আর যে আপনার বিরোধিতা করে তার সাথে আপনার শত্রুতার কারণে যেন শত্রুতা করি। হে আল্লাহ, এই দোয়া করা আমার কাজ আর কবুল করা আপনার কাজ, ইহা আমার প্রচেষ্টা এবং আপনার সত্তার উপর ভরসা রাখি।

হে আল্লাহ, দান করুন আমার অন্তরে নূর, আমার কবরে নূর, আমার সামনে নূর, আমার পিছনে নূর, আমার ডানে নূর, আমার বামে নূর, আমার উপরে নূর, আমার নিচে নূর, আমার কানে নূর, আমার চোখে নূর, আমার লোমে নূর, আমার ত্বকে নূর, আমার গোশতে নূর, আমার রক্তে নূর, আমার অস্থিতে নূর। হে আল্লাহ, আমার নূরকে বৃদ্ধি করে দিন, আমাকে নূর দান করুন, আমার জন্য নূর নির্ধারীত করে দিন।

পবিত্র সেই সত্তা ইজ্জত যার চাদর এবং তার ফরমান সম্মানিত। পবিত্র সেই সত্তা মহিমা ও মহত্ব যার পোশাক ও তাঁর দান।
পবিত্র সেই সত্তা যার শানই একমাত্র দোষ হতে পাক হওয়ার উপযুক্ত। পবিত্র সেই সত্তা যিনি বড় অনুগ্রহ ও নেয়ামতের মালিক। পবিত্র সেই সত্তা, যিনি অত্যন্ত মহিমাময় সম্মানিত। পবিত্র সেই সত্তা যিনি অতীব মর্যাদা ও দয়ার মালিক। তিরমিযী / মুনতাখাব হাদীস।

 

Advertisements

1 COMMENT

Leave a Reply