ফ্যাটি লিভার রোগের লক্ষণ | ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তির উপায়

0
56
মাথা ব্যথা দূর করার উপায় | দ্রুত মাথা ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
Advertisements
5/5 - (1 vote)

ফ্যাটি লিভার রোগের লক্ষণ | ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তির উপায়

বর্তমানে ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। লিভারের এই রোগ প্রাথমিক অবস্থায় নিয়ন্ত্রণে না আনলে যকৃত সঠিকভাবে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। এর থেকে শারীরিক বিভিন্ন সমস্যা বেড়ে যায়। ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্যমতে, ফ্যাটি লিভার ডিজিজ হলে লিভারে অতিরিক্ত পরিমাণে চর্বি জমা হয়। যদিও একটি সুস্থ লিভারে একটি নির্দিষ্ট মাত্রার চর্বি থাকে।

তবে যদি পরিমাণটি লিভারের ওজনের৫-১০ শতাংশের বেশি হয় তাহলে তা অিতিরিক্ত চর্বি হিসেবে বিবেচিত হয়। বিভিন্ন সমীক্ষার তথ্য অনুসারে জানা যায়, ফ্যাটি লিভারের রোগীদের মধ্যে ৭-৩০ শতাংশ মানুষের মধ্যে এর লক্ষণগুলো গুরুতর অবস্থা ধারণ করে। ফলে লিভার আরও ফুলে যাওয়া, লিভারের টিস্যুতে দাগ পড়া, এমনকি পেটেও কালচে ছোট পড়ে। ফ্যাটি লিভার থেকে এক সময় লিভারের সিরোসিসও হতে পারে।

মাথা ব্যথা দূর করার উপায়

ফ্যাটি লিভার কী?

হেপাটিক স্টেটোসিস, যা ফ্যাটি লিভার নামেও পরিচিত, লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমা হলে বিকাশ হয়। লিভার আপনার শরীরের দ্বিতীয় বৃহত্তম অঙ্গ। এটি আপনার রক্ত ​​থেকে বিপজ্জনক টক্সিন ফিল্টার করার জন্য দায়ী, এর প্রক্রিয়াকরণে সহায়তা করার পাশাপাশি খাদ্য ও পানীয় থেকে পুষ্টি হজম করার জন্য দায়ী। সূত্র : ফ্যাটি লিভার কেয়ার হাসপাতাল

Advertisements

যদিও ফ্যাটি লিভার রোগের সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ নেই। তবে অ্যালকোহল পানের কারণে অ্যালকোহলযুক্ত ফ্যাটি লিভার ডিজিজ হয়ে থাকে। অন্যদিকে ভুল জীবনধারণ ও খাদ্যভ্যাসই মূলত নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজের অন্যতম কারণ।

নন-অ্যালকোহলযুক্ত ফ্যাটি লিভার ডিজিজে আক্রান্ত ব্যক্তিরা প্রথমদিকে কোনো উপসর্গ টের না পেলেও পরবর্তী সময়ে এটি আরও গুরুতর আকার ধারণ করে।

ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ জানান, ফ্যাটি লিভারে আক্রান্ত ব্যাক্তিরা সন্ধ্যা বা রাতে হাত-পায়ের তালুতে ‘চুলকানি’ অনুভব করে। এটি সাধারণ সমস্যা ভেবে এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয় কারও। এটি হতে পারে ফ্যাটি লিভারের অন্যতম এক গুরুতর লক্ষণ। নিয়মিত এই সমস্যা দেখলে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে।

যদিও মায়ো ক্লিনিকের তথ্য অনুসারে, ফ্যাটি লিভারের রোগে চুলকানি একটি বিরল ঘটনা, এটি প্রাথমিক বিলিয়ারি সিরোসিস (পিবিসি), প্রাথমিক স্কলেরোসিসসহ অন্যান্য ধরনের লিভারের রোগের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ।

ফ্যাটি লিভার গ্রেড ১ মানে কি ?

যদিও গ্রেড ১ ফ্যাটি লিভারকে ফ্যাটি লিভার রোগের সর্বনিম্ন গুরুতর রূপ হিসাবে বিবেচনা করা হয়, তবে এটিকে হালকাভাবে নেওয়া উচিত নয়। যদি চিকিত্সা না করা হয় তবে এটি আরও গুরুতর পর্যায়ে অগ্রসর হতে পারে, যার ফলে লিভারের প্রদাহ, দাগ (হেপাটিক সিরোসিস বা অন্ত্রের কঠিনীভবন) এবং লিভার এর অকার্যকারিতা হলে। অতএব, গ্রেড ১ ফ্যাটি লিভার সম্ভাব্য ক্ষতিকারক তা বোঝা রোগের অগ্রগতি রোধে সক্রিয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ফ্যাটি লিভার গ্রেড ২ মানে কি ?

গ্রেড 2 ফ্যাটি লিভার ডিজিজ, যা মাঝারি ফ্যাটি লিভার ডিজিজ নামেও পরিচিত, অনেক ক্ষেত্রে জীবনযাত্রার পরিবর্তনের সাথে বিপরীত হতে পারে। গবেষণা অনুসারে, গ্রেড 2 ফ্যাটি লিভারের প্রায় 25-30% লোক শুধুমাত্র খাদ্য এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে এটিকে বিপরীত করতে পারে। প্রাথমিক শরীরের ওজনের কমপক্ষে 5-10% ওজন কমানো একটি ভাল লক্ষ্য। অতিরিক্ত পাউন্ড হারানোর ফলে লিভারের উপর কম চাপ পড়ে।
 

কেন এমন চুলকানি হয়?

বিজ্ঞানীরা এখনও লিভারের রোগের সঙ্গে যুক্ত চুলকানির কারণ শনাক্ত করতে পারেননি। তবে কিছু বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেন, যাদের যকৃতের রোগ আছে তাদের ত্বকের নীচে পিত্ত লবণের উচ্চ মাত্রা থাকায় চুলকানির সৃষ্টি হতে পারে।

লিভারের রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা কেন চুলকানি অনুভব করেন তার পেছনে আরেকটি কারণ হতে পারে সিরাম অ্যালকালাইন ফসফেটেস (এএলপি)। এটি একটি এনজাইম যা রক্তে পাওয়া যায় ও শরীরে প্রোটিন ভেঙে ফেলতে সাহায্য করে)।

চুলকানি প্রতিরোধে করণীয়

  • হালকা সুগন্ধিমুক্ত সাবান বেছে নিন।
  • স্নানের সময় হালকা গরম বা ঠান্ডা জল ব্যবহার করুন।
  • চুলকানির জায়গায় একটি ঠান্ডা বা ভেজা কম্প্রেস প্রয়োগ করুন।
  • রোদ বা গরম পরিবেশ এড়িয়ে চলুন।
  • ঢিলেঢালা পোশাক পরুন।

ফ্যাটি লিভারের আরও যেসব লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন-

মায়ো ক্লিনিকের মতে, এ রোগ সাধারণত কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ সৃষ্টি করে না। তবে ফ্যাটি লিভারের রোগীরা নিযমিত ক্লান্তি, মাথাব্যথা ও উপরের ডানদিকে পেটে অস্বস্তি অনুভব করেন। এছাড়া আরও কিছু লক্ষণও দেখা দেয় যেমন-

  • পেট ফুলে যাওয়া
  • ত্বকের নীচে রক্তনালি দেখতে পাওয়া
  • বর্ধিত প্লীহা
  • হাত-পায়ের তালু লাল হওয়া
  • জন্ডিস

ফ্যাটি লিভার দূর করার ঘরোয়া উপায়

ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমাতে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, অ্যালকোহল সেবন সীমিত করা ও ধূমপান ত্যাগ করা জরুরি। একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট বেছে নিন, যাতে বেশি ফল ও সবজি ও কম প্রক্রিয়াজাত, তৈলাক্ত খাবার থাকে। যাদের ডায়াবেটিস, উচ্চ কোলেস্টেরলের মতো রোগ আছে তারা অবশ্যই নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন ও মেডিকেল চেকআপের মধ্যে থাকবেন।

Advertisements

Leave a Reply