অর্থনৈতিক উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা রচনা | বাংলা ২য় পত্র

0
142
ভাষা আন্দোলন রচনা
ভাষা আন্দোলন রচনা
Advertisements
Rate this post

অর্থনৈতিক উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা রচনা | বাংলা ২য় পত্র

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আশা করি তোমরা ভাল আছো । তো আজকে তোমাদের জন্য নিয়ে এলাম অর্থনৈতিক উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা রচনা। এই রচনা তোমরা যারা পরীক্ষার্থী তাদের অনেক কাজে লাগবে । তো তোমাদের ভাল লাগলে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে Facebook, messenger, WhatsappTelegram, Instagram এবং IMO তে শেয়ার করতে পারো ।

অর্থনৈতিক উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা রচনা

অর্থনৈতিক উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থা রচনা

ভূমিকা:

যোগাযোগের সঙ্গে উন্নয়নের সম্পর্ক প্রায় অবিচ্ছেদ্য। উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছেন যে, যোগাযোগের সাথে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উন্নয়নের যোগ অবিচ্ছেদ্য। যেমন পরিবহণ যোগাযোগ উন্নত হলে কৃষিজাতপণ্য, শিল্পের কাঁচামাল সহজে, স্বল্পব্যয়ে স্থানান্তর করা যায়। উৎপাদন ও বিপণন সহজতর হয়। এতে শিল্প ও বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হয়। তাই বর্তমান বিশ্বে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসেবে যোগাযোগকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হয়।

Advertisements

যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রকারভেদ:

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অকল্পনীয় গতিশীলতায় বিশ্ব আজ প্রবেশ করছে যোগাযোগ ও তথ্যবিপ্লবের যুগে। মানুষ ক্রমাগত তার জীবনযাপনে স্থানের দূরত্ব, সময়ের সীমাবদ্ধতা, প্রতিকূল বাধা কাটিয়ে নিজেকে যুক্ত করছে যোগাযোগের মহাসড়কে। সমার্থক হয়ে উঠছে যোগাযোগ ও উন্নয়ন। যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যম রয়েছে। যেমন সড়ক যোগাযোগ, রেল যোগাযোগ, নৌ-যোগাযোগ, বিমান যোগাযোগ, ই- মিডিয়া অর্থাৎ মোবাইল, টেলিফোন, ইন্টারনেট ইত্যাদির মাধ্যমে যোগাযোগ। বিশ্বব্যবস্থার বহুমাত্রিক এ প্রক্রিয়াকে বিশ্বায়ন বা গ্লোবালাইজেশন বলা হয়। বিশ্বায়নের ফলে মানুষ ভাষার ব্যবধান, ভৌগোলিক দূরত্ব, সংস্কৃতিগত পার্থক্য, আঞ্চলিক বিচ্ছিন্নতা ইত্যাদি অন্তরায় কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে।

সড়ক, রেল, নৌ এবং বিমান যোগাযোগ সড়ক যোগাযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষিনির্ভর ও গ্রামভিত্তিক কাঁচামাল, শিল্পপণ্য সরবরাহ ও উৎপাদিত পণ্য দ্রুত স্থানান্তর সহজ হয়েছে। কৃষি উন্নয়ন, শিল্প উন্নয়ন, কৃষি ও শিল্পজাত পণ্য বাজারজাতকরণ, যাতায়াত ও পরিবহণ, বনজ সম্পদের সংগ্রহ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সড়ক-যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

পরিবহণ ব্যবস্থার সঙ্গে বিপুল সংখ্যক মানুষের জীবিকার প্রশ্ন জড়িত। পল্লি-উন্নয়নই দেশের উন্নয়ন এবং তার জন্য সড়ক-যোগাযোগের বিশেষ অবদান রয়েছে। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে, সম্প্রসারিত হচ্ছে সড়ক উন্নয়ন ব্যবস্থা। এতে যাত্রীসাধারণ ও মালামাল পরিবহণে সুবিধা অনেক বেড়েছে।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও প্রশাসনিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে রেলপথের গুরুত্ব কম নয়। যাত্রী পরিবহণ, পণ্যসামগ্রী পরিবহণ, কৃষি ও শিল্প উন্নয়ন, বাজারব্যবস্থা সম্প্রসারণ, গ্রাম ও শহরের মধ্যে যোগাযোগ, কর্মসংস্থান, রাজস্ব আয় ইত্যাদি ক্ষেত্রে রেলপথের অবদান অপরিসীম।

নদীমাতৃক বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নে নৌপথের গুরুত্ব কোনো অংশে কম নয়। বাংলাদেশে নদীপথে যোগাযোগের পরিমাণ প্রায় সাড়ে আট হাজার কিলোমিটার। তবে এই পথের সবটুকুতে সারাবছর নাব্যতা থাকে না। নৌপথে স্টিমার, লঞ্চ, কার্গো, ইঞ্জিনচালিত নৌকা এবং বৈদেশিক বাণিজ্যজাহাজ পণ্যসামগ্রী বহন ও যাত্রী আনা নেওয়ার মাধ্যমে বিপুল আয় করে।

বিশ্বায়ন প্রক্রিয়ায় বিমান যোগাযোগ একটা নতুন মাত্রা স্থাপন করেছে। দ্রুত যাতায়াত, খাদ্য ও ঔষধ পরিবহণ, প্রযুক্তিনির্ভর জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসারের ক্ষেত্রে বিমান-যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সবকটি দেশে বাংলাদেশের শ্রমিক রয়েছে। এ বিপুল শ্রমশক্তি রপ্তানি এবং তাদের যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম হচ্ছে বিমানপথ। এর মাধ্যমে অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিমান-যোগাযোগের একটি বিশেষ অবদান রয়েছে।

অর্থনৈতিক উন্নয়নে ই-মিডিয়া:

মানুষের জীবনের মূল ভিত্তি অর্থনীতি। অর্থনীতির সঙ্গে মানুষের রাজনীতি, সংস্কৃতি ও সামাজিক জীবন সবকিছু জড়িত। তাই বিশ্বায়ন বিশ্বমানবগোষ্ঠীর মধ্যে একটি আন্তঃপারিবারিক জ্ঞানময় যোগাযোগ হলেও তা একটি অর্থনৈতিক প্রত্যয় হিসেবে কাজ করে। আর এই অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও গণমাধ্যমের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। ড্যানিয়েল লার্নার উন্নয়নের গণমাধ্যমের প্রত্যক্ষ ভূমিকার কথা বলেছেন। তিনি বলেন। গণমাধ্যমে তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে মানসিক গতিশীলতা বাড়ায়।

এই মনস্তাত্ত্বিক গতিশীলতা অর্থনৈতিক উন্নয়নের আবশ্যক উপাদান। এ কারণে রেডিও, টেলিভিশন, সংবাদপত্র ইত্যাদি গণমাধ্যমকে বলা হয়েছে মবিলিটি মাল্টিপ্লায়ার। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ গণমাধ্যমের ত্রিবিধ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেছেন:

ক. তথ্য জ্ঞাপন,

খ. অংশগ্রহণ,

গ. প্রশিক্ষণ।

গণমাধ্যমের সঙ্গে ব্যক্তির আন্তঃযোগাযোগ বৃদ্ধির ফলে আগামীতে বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি সাধিত হবে। এ ছাড়া তথ্যপ্রযুক্তির যোগাযোগও বর্তমান বিশ্বে অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। মোবাইল, কম্পিউটার, ইন্টারনেটের মাধ্যমে তথ্য-যোগাযোগের যে মহাসড়ক উন্মোচিত হয়েছে, তা বিস্ময়কর। প্রতিটি আধুনিক মানুষ এখন গ্লোবাল ইনফরমেশন অ্যান্ড ওয়ার্ল্ড কমিউনিকেশন-এর আওতায় রয়েছে।

উপসংহার:

মানব উন্নয়নের দুটো প্রধান দিক হলো, মানব সম্পদ উন্নয়ন এবং মানুষের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা। আর এই দুটো দিকই যোগাযোগের ওপর নির্ভরশীল। জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় যেসব কর্মসূচির কথা বলা হয়েছে- শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গণসচেতনতা ইত্যাদির প্রধান নিয়ামক শক্তি হচ্ছে যোগাযোগ। যোগাযোগ মাধ্যম আজ সমগ্র বিশ্বে সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার; এমনকি যে-কোনো যুদ্ধের চেয়েও শক্তিশালী। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে যোগাযোগের অবদান প্রত্যক্ষ ও ব্যাপক।

আরও পড়ুন……

Advertisements

Leave a Reply